Description
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের জনআকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশের প্রধানতম কবির নাম আল মাহমুদ। আল মাহমুদ বিগত স্বৈরাচারী শাসনামলে ক্ষমতাসীনদের নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক পাণ্ডাদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন। বিগত চার দশক ধরে আল মাহমুদ সাংস্কৃতিক স্বৈরাচার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চেতনা বিরোধী তৎপরতার বিপক্ষে যে আমৃত্যু লড়াই অব্যাহত রেখেছিলেন, ২৪ এর সফল গণঅভ্যুত্থান তারই ধারাবাহিকতা। তাই নতুন বাংলাদেশে আল মাহমুদ অবশ্য পাঠ্য কবিসত্তা। আল মাহমুদ প্রগতিশীলতার নামে বাম বুদ্ধিজীবীদের ইসলাম বিরোধী তৎপরতার প্রধান সমালোচক ছিলেন। বাঙালি মুসলমানের সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আল মাহমুদকে আজীবন আবিষ্কার করা গেছে প্রতিবাদীদের প্রথম কাতারে। এ জন্য কবিকে সইতে হয়েছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক লাঞ্ছনা। বঞ্চিত করা হয়েছে নাগরিক মর্যাদা ও মুক্তিযোদ্ধার সম্মান থেকে। কিন্তু ঈমানের ঐশ্বর্যে প্রাণবন্ত কবি এতে অবদমিত ছিলেন না। তার অবস্থান ছিল ঈমান ও ইসলামের পক্ষে। তিনি ছিলেন বাঙালি মুসলমানের সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পুরোধা পুরুষ। আল মাহমুদের কবিতা একান্ত নিবিড়ভাবে মিশে থাকে বাংলাদেশের নদ-নদী, প্রকৃতি-প্রান্তর, মানুষ ও মৃত্তিকায়। তার গল্প-উপন্যাসে ঘনিষ্ঠভাবে উঠে এসেছে বাংলাদেশের দৃশ্যচিত্র, ইতিহাসের আবছায়া অধ্যায়, বৃহত্তর গণমানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন। সমুদয় রচনার মধ্যে আল মাহমুদের প্রবন্ধাবলি তার আদর্শিক সংগ্রাম ও প্রতিশ্রুত গন্তব্যের প্রতি অকুণ্ঠ অগ্রসরতার উচ্চস্বর আত্মপ্রকাশ। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর প্রতি তার দায় ও দরদ প্রতিফলিত হয়েছে তার প্রবন্ধাবলিতে। তাই এই নতুন বাংলাদেশের জন্মলগ্নে গভীর অভিনিবেশে তার প্রবন্ধসমূহ পাঠ করা অবশ্যই গণআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ নির্মাণপ্রকল্পের অন্যতম বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মসূচি।
Reviews
There are no reviews yet.