Description
একজন মুমিনের সর্বপ্রথম কাজ হলো, সে তাঁর মহান রবকে চিনবে, রবের পরিচিতি লাভ করবে, রবের কাছে প্রিয় হবে। একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু হলো, রবের প্রতি ঈমান আনা, রবের সকল বিধিবিধানের প্রতি ঈমান আনা এবং ঈমান মজবুত করা। আর তার রব এ ঈমানকে শক্তিশালী করার কিছু মাধ্যমও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যেসব মাধ্যমে ঈমান শক্তিশালী হয় তার অন্যতম হলো, কুরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের পরিচয় লাভ করা এবং এসব নামের অর্থ বুঝতে আগ্রহী হওয়া এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা। কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা বুঝা যায় যে ওই নামসমূহ মুখস্থ করবে, নামসমূহের অর্থ ও মর্ম বুঝবে, এসব নাম দিয়ে আল্লাহর প্রসংশা করবে, এগুলোর মাধ্যেমে আল্লাহর কাছে চাইবে এবং এগুলোর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে-সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। . আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নামসমূহ জানা হলো ঈমানের মূল। কারণ, এসব নাম জানা তিন প্রকারের তাওহিদকে অন্তর্ভুক্ত করে। তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহ, তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ ও তাওহিদুল আসমা ওয়াস-সিফাত। আর এ প্রকারগুলো হলো, ইমানের রূহ, মূল ও শেষ গন্তব্য। যখনই আল্লাহর নাম ও সিফাত বিষয়ে বান্দার জ্ঞান বাড়বে, তখন তার ইমানও বাড়বে এবং তার বিশ্বাস আরো শক্তিশালী হবে। সুতরাং মুমিনের উচিত সে তার সর্ব শক্তি ব্যয় করবে আল্লাহর নাম, সিফাত ও কর্মসহ তাঁকে চিনার জন্য, জানার জন্য । এবং তার জানার উৎস হবে, কুরআন, সুন্নাহ এবং সাহাবা কিরাম ও সঠিকভাবে সাহাবা কিরামের অনুসারীদের বর্ণনা। এটাই হলো, উপকারী জানা, যার মাধ্যমে মুমিনের ইমান বাড়তে থাকবে, বিশ্বাস শক্তিশালী হবে, সর্বাবস্থায় সে প্রশান্তি পাবে এবং তার রবের ভালোবাসা অর্জন হবে। যে আল্লাহকে তাঁর নাম, সিফাত ও কর্মসহ চিনতে পারবে, তাকে আল্লাহ অবশ্যই ভালোবাসবেন। . এ বইটিতে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম একত্রিত করা হয়েছে। অতপর নির্ভরযোগ্য উৎসের আলোকে নামগুলোর ব্যাখ্যা ও তাৎপর্য চমৎকারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বইটির বিশাল এক অংশ জুড়ে দেয়া হয়েছে এসব নামের মূলনীতি দিয়ে, যা আমাদের জানা অতি জরুরী। এ ছাড়া আল্লাহর নাম ও সিফাত-বিষয়ক অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফাতওয়াও সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে।….
মানবদেহকে যদি একটি রাজ্যের সাথে তুলনা করা হয়, তবে সেই রাজ্যের রাজধানী হবে ‘হৃদয়’। রাজধানীর মতোই পুরো দেহের ভালো বা খারাপ থাকা অনেকাংশেই নির্ভর করে হৃদয়ের উপর। হৃদয় যদি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে, তবে মুহূর্তেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে সারা দেহে। কারণ হৃদয়ের ব্যধিগুলো সংক্রামক। তাই সমগ্র দেহের সুস্থতার জন্য সবার আগে প্রয়োজন হৃদয়ের সুস্থতা ও শুদ্ধতা। প্রয়োজন হার্দিক প্রশান্তি। হার্দিক সুস্থতা, শুদ্ধতা ও প্রশান্তি অর্জনেরই কিছু দিকনির্দেশনা ও উপদেশমালা নিয়ে রচিত হয়েছে এই বইটি—‘হার্দিক প্রশান্তির খোঁজে’…
আমাদের প্রিয় রব্বে কারিম রমাদানে সিয়াম-পালন আমাদের ওপর ফরজ করেছেন এবং তিনিই আমাদের জন্য এর প্রতিদান দেবেন; কিন্তু রমাদানের সিয়াম পালনের পূর্বে আমাদের জন্য জরুরি হলো, সিয়াম-বিষয়ক প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়িল ভালোভাবে জানা, বোঝা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। এটি সকল মুমিনেরই কর্তব্য। কেননা, বিশুদ্ধ নিয়াত ও পদ্ধতিতে সিয়াম-পালন করলেই কেবল আল্লাহ তাআলার কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে।
বক্ষ্যমাণ এ গ্রন্থটিতে শাইখ আহমাদ মূসা জিবরীল হাফিজাহুল্লাহ অনেক সুন্দরভাবে রমাদানের বিভিন্ন মাসআলা আলোচনা করেছেন। তিনি হাম্বলী মাযহাবের কিতাবকে সামনে রেখে আলোচনা করলেও মাসআলাগুলো আলোচনা করার ক্ষেত্রে একটি মাযহাবের ওপর সীমাবদ্ধ থাকেননি; বরং তুলনামূলক ফিকহি মাসআলাগুলোও আলোচনা করেছেন। ইমামদের মতামতগুলো তুলে ধরেছেন। এ ক্ষেত্রে হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী মাযহাবের ইমামদের মতামতগুলো বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন। এরপর কেন ও কীভাবে এই মতগুলো এলো, কোনটি সঠিক হতে পারে ইত্যাদি দেখিয়েছেন। উসুলুল ফিকহ ও তুলনামূলক ফিকহের আলোকে মাসাআলাগুলো তিনি আলোচনা করেছেন। আর এগুলো আলোচনা করতে গিয়ে কখনো জুমহুর উলামায়ে কিরামের মতামতকে প্রাধান্য দিয়েছেন, কখনো হাম্বলী মাযহাবের মুতামাদ মতকে তার নিজ ইজতিহাদি যোগ্যতার আলোকে ভুল বা দুর্বল বলেছেন, আবার কখনো ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ রহিমাহুল্লাহর মতকে দুর্বল বলেছেন, আবার কখনো প্রাধান্য দিয়েছেন।
শাইখের এমন বিশ্লেষণধর্মী আলোচনার কারণে, বইটির বিশেষত্ব হলো—এর মাধ্যমে পাঠক এখান থেকে মাসআলা শেখার পাশাপাশি জানতে পারবেন মাসআলাটা কীভাবে এবং কী পদ্ধতিতে এলো। সেই সাথে জানতে পারবেন মুজতাহিদ ইমাম বা উলামায়ের কিরামের ভিন্নমতের দালিলিক ও যৌক্তিক কারণ—যা একজন পাঠককে ভিন্নমতের প্রতি উদার ও সাহনশীল হতে সহায়তা করবে।
হুদাইবিয়ার সন্ধি(সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্ব)
ঐতিহাসিক ‘হুদাইবিয়ার সন্ধি’—কুরআনুল কারিমে যাকে আখ্যা দেওয়া হয়েছে ‘সুস্পষ্ট বিজয়’ নামে। একটি প্রতিষ্ঠিত জোট, সমাজ, রাষ্ট্র ও জীবনব্যবস্থার মোকাবিলায় সত্যের ঝান্ডা নিয়ে মদিনায় জন্ম নেওয়া ছোট্ট ও নবীন ইসলামী রাষ্ট্রের আত্মপরিচয়ের ঐতিহাসিক দলিল। সত্যই সুস্পষ্ট বিজয়। মিথ্যার সাথে সত্যের দ্বন্দ্ব। মিথ্যার সামনে সত্যানুসারীদের সিনা টান করে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা। তবে এর সাময়িক শান্তিচুক্তির ধারা যুগ যুগ ধরে নিজেদের পরাজিত ও আপসকামী মানসিকতার দলিল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে বাতিলের সাথে আপসকামীরা। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দ্বীনের খণ্ডিত বয়ান নিয়ে হাজির হওয়া, দ্বীনকে কাটছাঁট করে উপস্থাপন, বাতিলের পছন্দসই পন্থায় ইসলামকে চিত্রায়ণ—আজকাল এমন নানা উপায়ে পরাজিত মানসিকতা ও আপসকামিতার মানহাজকে বৈধপ্রমাণে করা হচ্ছে বিভিন্ন কসরত। তাই এ ঐতিহাসিক সন্ধির হাকিকত নিয়ে ব্যাখ্যামূলক স্বতন্ত্র রচনার যেন একান্তই প্রয়োজন ছিল। আর এ বইটি সেই প্রয়োজন পূরণেরই একটি ছোট্ট প্রয়াস। বইটি মূলত শাইখ আহমাদ মূসা জিবরীলের লেকচার সিরিজ ‘The Treaty of Hudaybiyyah : Falsehood vs Facts’-এর গ্রন্থিত রূপ।
Reviews
There are no reviews yet.