Availability: In Stock

দরসুত ত্বহাবী ১ম খণ্ড

675.00৳ 

Description

সংক্ষিপ্ত জীবনী

তিনি হলেন আবু জা’ফর আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সালামা আল আজদী আত-ত্বহাবী র.। তিনি ছিলেন হাদীছের হাফেয, ইমাম, ফকীহ, প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ এবং মিশরের হানাফী ফকীহদের মধ্যে সবচেয়ে বড় আলেম। ঐতিহাসিকদের বিশুদ্ধ মতে ২৩৯ হিজরী মোতাবেক ৮৫৩ খৃস্টাব্দে তিনি মিশরের ত্বহা নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্ব-পুরুষগণ যেহেতু ইয়ামানের প্রখ্যাত আজদ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তাই তাকে আজদী বলা হয়। আর তিনি যেহেতু মিশরের ত্বহা নামক গ্রামে জন্ম-গ্রহণ করেন, তাই তার জন্মস্থানের দিকে সম্বন্ধ করে তাকে ত্বহাবী বলা হয়।

জন্ম ও শৈশব

তিনি দ্বীনদার ও আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, সে হিসাবে শিশুকাল থেকে তিনি দ্বীনি পরিবেশে প্রতিপালিত হন। শৈশবকাল থেকেই তার মধ্যে ইলম অর্জনের প্রতি অসাধারণ অনুরাগ পরিলক্ষিত হয়। প্রথমত তিনি তার পিতা মুহাম্মাদ ইবনে সালামার নিকট থেকে শাফেঈ ফিকহ এর মূলনীতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন। সে সময় তার মামা আবু ইবরাহীম আল-মুযানী ইমাম শাফেঈর সবচেয়ে বড় শিষ্য এবং শাফেঈ মাযহাবের সবচেয়ে বিচক্ষণ ফকীহ ছিলেন। তার পরিবারের অন্যরাও শাফেঈ ফিক্‌হ এর অনুসারী ছিলেন। তাই তিনিও প্রথম জীবনে শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি শাফেঈ মাযহাব পরিত্যাগ করে হানাফী মাযহাবের অনুসারী হয়ে যান।

শিক্ষালাভ

লেখা-পড়ার বয়সে উপনীত হওয়ার সাথে সাথে তিনি জ্ঞানার্জন শুরু করেন। তার শিক্ষা জীবনের সূচনা হয় তার মামা আবু ইবরাহীম ইসমাঈল ইবনে ইয়াহইয়া আল-মুযানী রহিমাহুল্লাহ এর নিকট। তার মামা আবু ইবরাহীম ছিলেন ইমাম শাফেঈ রহিমাহুল্লাহর ছাত্রদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফকীহ এবং ইমাম শাফেঈর ইলমের ভান্ডার। তার মামার নিকট থেকে সর্বপ্রথম জ্ঞান চর্চা শুরু করলেও জ্ঞান পিপাসা নিবারণ করার মানসে স্বীয় আবাসস্থল থেকে মিশরে আসেন। এ ছাড়াও তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য অনেক জায়গা সফর করেন। যেখানেই কোনো জ্ঞান তাপসের সন্ধান পেতেন, তিনি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হতেন এবং জ্ঞান পিপাসা নিবৃত করতেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি ২৬৮ হিজরীতে সিরিয়া গমন করেন। তা ছাড়া বাইতুল মুকাদ্দাস, আসকালান ইত্যাদি স্থানে সফর করে বিভিন্ন মনীষী থেকে হাদীছ ও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।

ফিকহ শাস্ত্রে তার জ্ঞানের সীমা প্রশস্ত হওয়ার সাথে সাথে তিনি অনেক ফিকহী মাস‘আলার ক্ষেত্রে দিশেহারা হতে লাগলেন। তার মামার নিকট এসব মাস‘আলার কোনো সমাধান খুঁজে পেতেন না। এসব মাস‘আলার সমাধানের ক্ষেত্রে তিনি তার মামার আচরণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। তিনি দেখলেন, তার মামা শাফেঈ মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে এসবের কোনো সমাধান না পেয়ে ইমাম আবু হানীফার ছাত্রদের কিতাবসমূহের প্রতি প্রায়ই ইঙ্গিত করেছেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই তিনি ইমাম আবু হানীফা রহিমাহুল্লাহর মতকে প্রাধান্য দিতে লাগলেন। তার মামা ইসমাঈল আল-মুযানী হানাফী মাযহাবের যেসব মাস‘আলা গ্রহণ করেছেন, তা তিনি مختصر المزني (মুখতাসারুল মুযনী) নামক কিতাবে সংকলন করে করেছেন।

তার ইলমী খেদমত

সঠিক তথ্য উদঘাটন, সংকলন, সংগ্রহ, সুন্দর ও সাবলীল উপস্থাপনার দিক থেকে তার লেখনীগুলো অনন্য। তিনি যেসব মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন, তার মধ্য রয়েছে,

(১) আহকামুল কুরআনিল কারীম

(২) ইখতেলাফুল উলামা

(৩) শারহু মা‘আনিল আছার। এতে তিনি দলীলসহ ফিক্হ এর মাস‘আলাসমূহ আলোচনা করেছেন। এতে তিনি মতভেদপূর্ণ ফিকহী মাস‘আলাগুলো উল্লেখ করার সাথে সাথে দলীলগুলোও উল্লেখ করেছেন। মাস‘আলা ও দলীলগুলো উল্লেখ করার পর সেগুলো পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাই করে তার কাছে যেটি সুস্পষ্ট হয়েছে, সেটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কিতাবটি ছাত্রদেরকে গভীর জ্ঞান অর্জনের প্রশিক্ষণ দেয়, ফিকহী মাস‘আলাগুলোতে আলেমদের মতভেদের কারণ সম্পর্কেও অবগত করে এবং দলীল থেকে হুকুম-আহকাম নির্গত করার যোগ্যতা বৃদ্ধি করে। এর মাধ্যমে ছাত্রদের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও যোগ্যতাও বৃদ্ধি পায়।

(৪) ছহীহুল আছার

(৫) আস্ সুনানুল মাছুরাহ

ইমামের মৃত্যু

ইবনে খাল্লিকান وفيات الاعيان গ্রন্থে ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ এর ওফাত প্রসঙ্গে বলেন যে, যুগ শ্রেষ্ঠ ফকীহ, সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী জ্ঞান তাপস আল্লামা আবু জাফর ত্বহাবী ৩২১ হিজরী মোতাবেক ৯৩৩ খৃস্টাব্দে ৮২ বছর বয়সে যিলকদ মাসের বৃহস্পতিবার রাতে মিসরে ইন্তিকাল করেন। সেখানকার গোরস্থানেই তাকে দাফন করা হয়। হে আল্লাহ! তুমি তাকে নাবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎ কর্মশীলদের সাথে জান্নাতুল ফেরদাউছে স্থান দাও। আমাদের সকলকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো। আমীন!

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “দরসুত ত্বহাবী ১ম খণ্ড”

Your email address will not be published. Required fields are marked *